ঢাকা

৩০ হাজার মানুষের চিকিৎসাকেন্দ্রটি পদ্মার গর্ভে

  প্রতিনিধি ২৯ আগস্ট ২০২১ , ৬:৩৪:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ

মানিকগঞ্জের হারিরামপুর উপজেলার চরাঞ্চলের আজিমনগর, সুতালড়ী ও লেছড়াগঞ্জ— এ তিনটি ইউনিয়নে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। চরাঞ্চলের বৃহৎ এই জনগোষ্ঠীর একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্র ছিল আজিমনগর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। কিন্তু প্রমত্ত পদ্মার ভয়াল থাবায় এটি এখন তার গর্ভে চলে গেছে।

সস্প্রতি পদ্মা নদীতে পানিবৃদ্ধির কারণে তীব্র স্রোত ও ভাঙন শুরু হয়। এতে ভাঙনের কবলে পড়ে ওই চিকিৎসা কেন্দ্রটি। ভাঙন রোধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বলেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসীর।

জানা গেছে, শনিবার (২৮ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে পদ্মার তীব্র স্রোতে ওই স্বাস্থ্য ও পরিবর কল্যাণ কেন্দ্রটির ৭০ ভাগের বেশি অংশ নদীগর্ভে চলে যায়। পরে বাকি অংশটুকু আজ সকালের দিকে নদীতে চলে গেছে। এতে তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষের চিকিৎসাসেবা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।

আজিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, গেল বছর এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নদী থেকে ১৫০ গজ দূরে ছিল। তখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে লিখিতভাবে জানিয়েছি। ভাঙনের কবল থেকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিকে রক্ষা করতে এ বছরও উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তার কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছেন বলে আমাকে জানান। কিন্তু ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো উদ্যোগই নেয়নি।

তিনি আও বলেন, আমাদের চরের তিনটি ইউনিয়নে প্রায় ৩০ হাজার লোকের বসবাস। তাদের চিকিৎসার জন্য ২০১৪ সালে ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় আজিমনগর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি। এখন চরাঞ্চলের এসব মানুষের চিকিৎসাসেবার নিয়ে আমারা শঙ্কিত।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, নদীতে প্রবল স্রোত থাকার কারণে ভাঙনরোধে এখন কিছুই করা সম্ভব নয়। তবে বিগত সময়ে ওই এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তাতে আমরা সফল হইনি।

সম্প্রতি ওই এলাকার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও নদীতে বিলীন হয়েছে। তখন আমারা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। এ কারণে নদীতীরবর্তী চরাঞ্চলে এখন কাজ করছি না।

তিনি বলেন, ৬০ লাখ টাকা খরচ করেও ৫০ লাখ টাকার স্থাপনা রক্ষা করা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, ভবিষ্যতে যাতে নদীতীরবর্তী ভাঙনকবলিত এলাকায় পাকা ভবন না করে, স্থানান্তরযোগ্য স্থাপনা তৈরি করা হয়। যাতে ভাঙনের আগেই তা সরিয়ে নেওয়া যায়।

উল্লেখ্য, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়েছে একই উপজেলার সুতালড়ী রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ ছাড়া চলতি বছর শতাধিক বাড়ি-ঘর, বিস্তীর্ণ ফসলি জমি ইতোমধ্যেই নদীতে চলে গেছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by