দেশজুড়ে

মূলধন হারানোর শঙ্কা: রংপুর বিভাগের খামারিদের লকডাউনে স্বপ্ন ভেঙ্গেছে

  প্রতিনিধি ২৯ জুন ২০২১ , ৭:০৪:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

রংপুর ব্যুরো:

লকডাউনের কারনে রংপুর বিভাগের লাখো গৃহস্থ ও খামারির স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। লাভতো দূরের কথা তাদের পুঁজি ওঠে আসবে না। বিশেষ করে যারা চড়া সুদে টাকা নিয়ে গরু লালন পালন করেছেন তাদের মূলধন হারিয়ে পথে বসতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন খামারি ও সংশ্লিষ্টজনরা।

খামারিরা বলছেন, আগামী বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া লকডাউন কোন পর্যাযে যাবে এবং ঈদের আগে করোনার সংক্রমণ কি হবে তার ওপর তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করছে। ঈদের এক সপ্তাহ আগে পরিস্থিতি অনুকুলে না আসলে পশু পালনকারীরা বিপুল সংখ্যক মানুষকে লোকসান গুনতে হবে। এ নিয়ে উদ্যোগ প্রকাশ করে খামারিরা বলছেন- বৃহস্পতিবার থেকে লকডাউন হলে মূলত সোমবার থেকে গণপরিবহণ বন্ধ রয়েছে। ফলে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় বেপারিদের গবাদি পশু কেনার সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

রংপুর বিভাগীয় প্রাণি সম্পদ বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, রংপুর বিভাগের রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় জেলায় গত অর্থ বছরে ১ কোটি ১৭ লাখ ৩ হাজার গবাদি প্রাণীর পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। প্রায় ১৪ হাজার নিবন্ধিত এবং অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে এসব গবাদি প্রাণির পালন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে রংপুর জেলায় ১ হাজার ৩২৮ টি নিবন্ধিত এবং ১ হাজার ৮২১ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ১৩ লাখ ৮৭ হাজার গরু ও মহিষ।

 

৯১ টি নিবন্ধিত ও ৬১১ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ৬ লাখ ৪৫ হাজার ছাগল এবং ২৫০ টি নিবন্ধিত ও ৪১৪ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ৯৫ হাজার ভেড়া পালন করা হচ্ছে। গাইবান্ধা জেলায় ৪৮৩ টি নিবন্ধিত এবং ২৪১ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ৮ লাখ ৫৯ হাজার গরু ও মহিষ। ৭৩ টি নিবন্ধিত ও ১৯৯ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় সোয়া ৫ লাখ ছাগল এবং ১৩৮ টি নিবন্ধিত ও ২৯৪ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ২ লাখ ভেড়া পালন করা হচ্ছে।

 

কুড়িগ্রাম জেলায় ৫৩০ টি নিবন্ধিত এবং ৫৬১ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ৬ লাখ ৫৩ হাজার গরু ও মহিষ। ৩০ টি নিবন্ধিত ও ২৪৫ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় সোয়া ৩ লাখ ছাগল এবং ৪০৩ টি নিবন্ধিত ও ১৮৭ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার ভেড়া পালন করা হচ্ছে।

লালমনিরহাট জেলায় ৩২৪ টি নিবন্ধিত এবং ৯৬টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ৬ লাখ ৮০ হাজার গরু ও মহিষ। ২৭ টি নিবন্ধিত ও ৮২ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় আড়াই লাখ ছাগল এবং ২৩১ টি নিবন্ধিত ও ৭৬ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ৪১ হাজার ভেড়া পালন করা হচ্ছে। নীলফামারী জেলায় ১৫১ টি নিবন্ধিত এবং ১৮৫ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ৬ লাখ ৭৪ হাজার গরু ও মহিষ।

৭৩ টি নিবন্ধিত ও ৬৮ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ৪ লাখ ৬৮ হাজার ছাগল এবং ১০৫ টি নিবন্ধিত ও ৭২ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ৩৭ হাজার ভেড়া পালন করা হচ্ছে। দিনাজপুর জেলায় ১ হাজার ৯১ টি নিবন্ধিত এবং ৫৭২ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ১৫ লাখ ৮ হাজার গরু ও মহিষ। ১১৮ টি নিবন্ধিত ও ৬৮৩ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ৯ লাখ ১১ হাজার ছাগল এবং ১৪ টি নিবন্ধিত ও ৪২২ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ১ লাখ ৩৪ হাজার ভেড়া পালন করা হচ্ছে।

 

ঠাকুরগাঁও জেলায় ৬২৯ টি নিবন্ধিত এবং ১০০ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ৬ লাখ ৪৮ হাজার গরু ও মহিষ। ৪৬ টি নিবন্ধিত ও ৮২ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ৫ লাখ ৪১ হাজার ছাগল এবং ২২ টি নিবন্ধিত ও ৫ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ৪১ হাজার ভেড়া পালন করা হচ্ছে। এছাড়া পঞ্চগড় জেলায় ২০৫ টি নিবন্ধিত এবং ১২৭ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ৬ লাখ ৪৮ হাজার গরু ও মহিষ। ১০৩ টি নিবন্ধিত ও ১১৮ টি অনিবন্ধিত খামারের মাধ্যমে প্রায় ৩ লাখ ৯৩ হাজার ছাগল এবং ৫৭ টি নিবন্ধিত ও ৭৩ টি অনিবন্ধিত। রংপুর জেলা প্রাণি সম্পদ অফিসার ডাক্তার সিরাজুল হক জানান, করোনাকালীন সময়ে খামারিদের নানাভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। খামারিরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য উপজেলা প্রাণি সম্পদ কমকতা নানা ভাবে পরামর্শ দিয়ে আসছে।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by